ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে?
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, আপনাদের প্রশ্ন- ফ্রিল্যান্সিং কি? ইহা মূলত কম্পিউটার এবং অনলাইন ভিত্তিক একটি কাজ। এখানে অনলাইনে বায়ার তার নিজের কাজের চাহিদাপত্রের বর্ণনা, কাজের পারিশ্রমিক, সময় ইত্যাদি দিয়ে থাকেন। আর সেলার অর্থাৎ ফ্রীলান্সার যদি তার এই সমস্ত চাহিদা পূরণ করে সময়মতো কাজ করে দিতে পারে তাহলে সে এই কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবে।
কেউ যদি ডাটা এন্টির কাজ শিখে থাকেন, সে শুধু এই ডাটা এন্ট্রি তার বায়ারের চাহিদা মোতাবেক সময়ের মধ্যে সরবরাহ করে অর্থ উপার্জন করেন। সেইরূপ ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং, লোগো মেকিং, ফটোশপ, পাওয়ার পয়েন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি কাজ করে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
আমাদের দেশের জন্য এই উপায়ে অর্থ উপার্জন করা একটা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। কারণ এখানে যেমন বিশাল বেকার সমস্যা রয়েছে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ঘাটতি রয়েছে। তাই বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখাটা অত্যন্ত জরুরী। তাছাড়া কাজটি শেখা এবং করার জন্য তেমন কোন নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না।
এটা নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে? যেকোনো একটি কাজ শিখতে কত দিন সময় লাগে তা নির্ভর করবে সেই ব্যক্তির কার্যক্রমের উপরে অর্থাৎ সে কতটা সময় দিচ্ছে আর কতটা মনোযোগী তার উপর ভিত্তি করে কাজটি শিখতে কম সময় বা বেশি সময় লাগে।
কেন ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন?
২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী আমাদের দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ১৬ লক্ষ। এর ভিতর গড়ে প্রায় ৮৬-৮৭ শতাংশ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রায় ১৩/১৪ লক্ষ উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা শিক্ষার্থী যখন উচ্চশিক্ষায় ভর্তির জন্য চাপ দেয়, তখন তাদের স্থানের কোন সংকুলান হয় না। তারপরও যারা ভর্তি হয় তারা মাস্টার্স ডিগ্রী শেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় হয়।
এমনিতে যতসংখ্যক বেকার রয়েছে, তার উপরে প্রতি বছর এরকম বেকারের সংখ্যা তৈরি হচ্ছে। আর যারা উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হওয়ার কোন সুযোগ পেল না তারা সরাসরি বেকারের গোডাউনে গিয়ে জড়ো হচ্ছে। ফলে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের উপরে একটি ব্যাপক চাপের সৃষ্টি হচ্ছে। অবশ্য ফ্রিল্যান্সিং শিখতে সুনির্দিষ্ট কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না।
তাছাড়া এটা শিখতে বেশিদিন সময় লাগে না।
আরও পড়ুন: লিচুর উৎপাদন এবং খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এই জনগোষ্ঠী যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখতো, তাহলে তাদের নিত্যনৈমিত্তিক কাজকর্ম যেমন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করা, সরকারি এবং বেসরকারি অন্যান্য চাকরি করা, নিজস্ব ব্যবসা-বাণিজ্য করা ইত্যাদিতে কোন নেগেটিভ প্রভাব পড়তো না। কারণ এটা এমনই একটি কাজ, যা স্বাধীনভাবে বা মুক্তভাবে, স্বাধীন সময়ে স্বাধীনভাবে করার সুযোগ রয়েছে।
তাই বেকার সমস্যা দূরীকরণ এবং আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের রিজার্ভের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানি। এমনতাবস্থায়, যদি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আরো কিছু ডলার আমাদের দেশে আনা যেত তাহলে রাষ্ট্রের জন্য সেটা নিশ্চয়ই মঙ্গলময় হতো। তাছাড়া-
- এটা লেখাপড়া, ব্যবসা, বা অন্য কোন কাজকর্মকে প্রভাবিত করে না।
- সকল পেশার সাথে জড়িত ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত সময় ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারে।
- আমাদের দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠী- মহিলারা শুধু বাড়িতে থেকেই জীবন কাটায়। তাদের পরিবারে বা সংসারে তেমন একটা কাজকর্ম বা ব্যস্ততাও নাই। তাদের ভিতরে অনেকেই শিক্ষিত আছেন যারা ইচ্ছে করলেই ফ্রিল্যান্সিং করে একটা ভালো ইনকাম করে সংসারের আয় উন্নতি করতে পারে
- ইহা শিক্ষিত বেকারের হার কমায়
- এটার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব
- এখানে বয়স বা শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন সীমাবদ্ধতা নাই
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন বা ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়বেন?
প্রিয় পাঠক, বর্তমান সময়ের কথা যদি বলি, অর্থাৎ আজ ২০২৪ সাল। এই ২০২৪ সালের কথা যদি বলি তাহলে বলতে হয় আমাদের দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯০ ভাগই কম্পিউটারের কোন না কোন কাজ জেনে থাকবেন। এমনকি কম শিক্ষিত ফাইভ সেভেন পাস মাঠের কৃষকের মধ্যেও অনেকেই স্মার্ট ফোন বা টাচ্ ফোন ব্যবহার করে থাকেন।
তাছাড়া এম এস ওয়ার্ড, এক্সেল ইত্যাদির কাজও জানা লোকের অভাব নাই। অর্থাৎ বলা যায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে যে সমস্ত কাজকর্ম করে অর্থ উপার্জন করা যায় তার সম্পর্কে মৌলিক ধারণা আপনারা আপনাদের নিজের অজান্তেই অনেকাংশে শিখে নিয়েছেন। তাহলে কেন আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারছিনা?
এটাই এখন বড় প্রশ্ন। আমরা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারছি না এইজন্য যে, ফ্রিল্যান্সিং কি? এটা সম্পর্কে আমাদের ধারণা পরিষ্কার না। অনেকেরই হালকা ধারণা আছে, অনেকে আবার এদিকে মাথা ঘামায় না। যার কারণে যোগ্যতা থাকার পরও তারা বাজার দখল করতে পারছে না। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে গেলে প্রথমে আমাদেরকে মন স্থির করতে হবে।
আমি কাজটি শিখব এবং এটার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার রোজগার করবো। দ্বিতীয়ত: আমাদের একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস লাগবে। যেমন, মোবাইল ফোন- যাহা আমাদের অধিকাংশের কাছেই একটি করে টাচ ফোন আছে। এছাড়া কেউ যদি আরো উন্নত কাজ করতে চায় তাহলে সে ক্ষেত্রে তার একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ থাকলে ভালো হতো।
কারণ মোবাইল ফোন দিয়ে কিছু কিছু কাজ করা যায় না। প্রাথমিক পর্যায়ে মোবাইল দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে রোজগারের মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে আমরা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ক্রয় করতে পারব এবং আরো উন্নত কাজ করে অধিক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রাবাদ ডলার রোজগার করতে পারবো। তৃতীয়ত আমরা একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের সহযোগিতা বা সাহায্য নেব।
এক্ষেত্রে নিজেদের পরিচিত আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব থাকলে বিনা পয়সায় তার কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যাবে। যদি এভাবে কোন সুযোগ পাওয়া না যায় তাহলে নিকটস্থ যে কোন একটি সরকারি বা বেসরকারি ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে ভালোভাবে কাজ শিখে নেওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন অনলাইন/ অফলাইন প্রচার মাধ্যমে এগুলো সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কোথায় শিখবেন?
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে Necessity know no bounds. অর্থাৎ প্রয়োজন কোন বাধা মানে না। আপনি যদি কাজটি শিখতে চান, তাহলে আপনার জন্য গোটা পৃথিবী উন্মুক্ত আছে। শুধু আপনাকে শক্ত মনে অনুসন্ধান চালাতে হবে। আপনি হাতের কাছেই পেয়ে যাবেন সকল প্রকার তথ্য ও সুযোগ সুবিধা।
কারণ যাদেরই ফোন আছে তারা অবশ্যই ফেসবুকে আমরা প্রচুর সময় নষ্ট করে থাকি। আমাদের এই মূল্যবান সময় ফেসবুকে নষ্ট না করে যদি আমরা একটু রোজগারমুখী হই তাহলে এটা শিখার সুযোগের কোন অভাব নেই। চলুন দেখি কোথায় কোথায় গিয়ে কাজ শিখব বা কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত দক্ষতা অর্জন করব-
- ফেসবুক ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর জন্য অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এড দিয়ে থাকে। তাদের যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখান থেকে আমরা অনলাইনে শিখতে পারি। তবে এই ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে যে অর্থ ইনকামের জন্য অনেক দুর্বল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এড দিয়ে থাকে। তাদের কাছে গেলে ঠকার সম্ভাবনা আছে।
- ইউটিউবে কম্পিউটার ভিত্তিক বিভিন্ন কাজ শেখানোর জন্য অনেকেই ভিডিও আপলোড করে থাকেন। এই ভিডিও গুলো সময় নিয়ে ধীরে ধীরে দেখলে এখান থেকে ফ্রি কাজ শেখার সুযোগ রয়েছে।
- সরকারিভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানগুলি এটার উপরে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে এগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নির্ধারিত সময়ের ভিতর ভর্তি হয়ে ভালোভাবে শেখা যেতে পারে।
- আজকাল আমাদের দেশের সকল জেলা শহরে এমনকি কোন কোন উপজেলা পর্যায়ও ফ্রিল্যান্সিং এর প্রশিক্ষণ বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি দিয়ে থাকেন। এদের ভিতর অনেক প্রতিষ্ঠানে আছে অত্যন্ত দক্ষ। যেমন আমি যদি বলি যে রাজশাহী শহরে আছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার নাম অর্ডিনারি আইটি। সেখানে যোগাযোগ করে দেখা যেতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে?
একটি প্রশ্ন অনেকের মাথায় ঘুরপাক খায়, ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে? এটার সঠিক কোন উত্তর নাই। কারণ আপনি খেয়াল করেন যে, আপনি যদি একজন বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল চালক হয়ে থাকেন, তাহলে বাইসাইকেলটি বা মোটরসাইকেলটি চালাতে শিখতে আপনার কতদিন সময় লেগেছে?
এবার আপনি খেয়াল করেন যে আপনার আশেপাশে যারা বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল চালায় তারা বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেলটি কতদিনে চালানো শিখেছে। আপনি যদি সাঁতার জেনে থাকেন তাহলে চিন্তা করেন যে সাঁতার শিখতে আপনার কতদিন সময় লেগেছে আর আপনার ভাই বা বন্ধুর কতদিন সময় লেগেছে।
তাহলে, এখান থেকে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যে, ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত দিন সময় লাগে? একটু আগেই বলেছি যে, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজ করা যায়। যেমন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং, ইমেজ মেকিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি। এখন আপনি প্রাথমিকভাবে দু্ই চারটি কাজ শেখার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ এবং তার বিভাগসমূহ
এই সকল কাজ কর শিখতে ব্যক্তি বিশেষে সময়ের অনেক তারতম্য হয়। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, কোন একজন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় দেয়, তাহলে সে তিন থেকে চার মাসের ভিতরে অনেকগুলি কাজে ব্যাপকভাবে দক্ষ হবেন। আপনার মনোযোগ ইচ্ছা শক্তি সংকল্প ইত্যাদি কাজটি শিখতে আপনাকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে।
যে কাজটি আপনার খুব ভালো লাগবে এবং যে কাজটিতে আপনি দক্ষতা অর্জন করবেন, সেই কাজটি নিয়ে আপনি আপনার বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আর যোগাযোগ করার জন্য যে সমস্ত প্ল্যাটফর্ম আছে, সেই সমস্ত প্লাটফর্মের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিবে আপনার প্রশিক্ষক। তাহলে এখন আপনাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে যে, ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে।
বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম/ মার্কেট প্লেস কি?
প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে যে মার্কেট বলতে কি বুঝায়? তারপরে আমরা জানবো মার্কেটপ্লেস কি? মার্কেট বলতে বুঝায় যেখানে দুই বা ততোধিক পার্টি থাকবে, একটা পার্টি বিক্রয় করবে আর একটা পার্টি ক্রয় করবে। অর্থাৎ দাম দরের মাধ্যমে যেখানে কোন পণ্য বা সেবা ক্রয় বিক্রয় করা হয় সেটাই হলো মার্কেটপ্লেস। অনলাইনে মার্কেটপ্লেস এখান থেকে একটু আলাদা ধরনের।
আরও পড়ুন: কলার উৎপাদন এবং কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এখন প্রশ্ন হলো যে, অনলাইনে আপনার পণ্য বা আপনার সেবাটি কি? আপনার পণ্য বা আপনার সেবাটি হলো আপনি মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ও ডেক্সটপে যে কাজগুলি শিখেছেন সেটাই আপনার পণ্য। যেমন আপনার বায়ার যদি লোগো তৈরি করতে চায় তাহলে আপনি তাকে একটি নির্ধারিত মূল্য এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লোগো তৈরি করে দিবেন।
অনুরূপে বড় এক্সেল ডাটাকে সংক্ষিপ্ত করে ছোট আকারে সাজানো, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, ইমেজ তৈরি, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি। অর্থাৎ যে প্লাটফর্মের মাধ্যমে কম্পিউটারে তৈরি বিভিন্ন সেবা বা পণ্য কেনাবেচা করা হয় তাকে মার্কেটপ্লেস বলে। অনলাইনে যে সমস্ত মার্কেটপ্লেস বর্তমানে বেশি কাজ করছে সেগুলো আপনাদের জানার জন্য নিচে দেওয়া হল-
- Fiverr
- Freelancer
- Upwork
- Guru
- Toptal
- Balancer
- Peopleperhour etc
মার্কেট প্লেসে কিভাবে কাজ পাবেন?
যে কোনো একটি মার্কেট প্লেসে ঢুকে আপনার পরিচয় বা বায়োডাটা সেখানে দিয়ে রাখতে হবে। অর্থাৎ আপনার একটি ছবিসম্মলিত বায়োডাটা দেওয়া থাকতে হবে। এটাকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভাষায় গীগ বলা হয়। এই গিগের ভিতরে আপনার কাজের দক্ষতার বর্ণনা দিতে হবে। তাছাড়া-
- আপনি যে কাজটি সবচেয়ে ভালো পারেন এরকম দু একটি কাজ গিগের ভিতর দিয়ে রাখতে হবে। এতে বায়ার আপনার সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পারবে এবং আপনার দক্ষতাকে যাচাই করতে পারবে।
- ইতিপূর্বে যে সমস্ত কাজ আপনি করে বায়ারের কাছে বিক্রয় করেছেন, তার স্ক্রিনশট সহ সকল কিছু এখানে দেয়া থাকতে হবে যাতে পরবর্তী সময়ে অন্যান্য বায়ার আপনার কাজকর্ম দেখে, দক্ষতা দেখে তার কাজের জন্য আপনাকে নির্বাচন করেন।
- গীগ তৈরীর সময় আপনি প্রতি ঘন্টায় কত ডলার এ কাজ করতে চান এই বিষয়টি লেখার সময় আপনি ভেবেচিন্তে লিখবেন।
- আপনি যে একাউন্টের টাকা গ্রহন করবেন সেই একাউন্টটা তৈরীর সময় কোন ফেক তথ্য বা ভুল তথ্য প্রদান করবেন না।
লেখকের মতামত
উপরের আলোচনা থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি যে ফ্রিল্যান্সিং কি এবং আমাদের বিশাল বেকার সমস্যার সমাধান ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে হতে পারে। আর ফ্রিল্যান্সিং শেখা যে বেশি কষ্টসাধ্য ব্যাপার না তাও আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারছি। এটার যেমন সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রয়েছে, তেমনি মার্কেট প্লেসেও অনেক কাজ আছে।
আমরা আরো জানতে পারলাম যে, ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে। আমরা অযথা ফেসবুকে প্রচুর সময় অযথা নষ্ট করে থাকি। সেই সময়টা যদি আমরা এটার ভিতর ব্যয় করি, তাহলে আমাদের একটা ভালো রোজগারও চলে আসবে। এতে যেমন পারিবারিক সচ্ছলতা আসবে, অপরদিকে বেকারত্ব দূর হবে এবং দেশও কিছু বৈদেশিক মুদ্রা পাবে।
তাবিনতান ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url